জাহিদ হাসান জিহাদ : যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর সহায়তায় আজ মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজারের একটি হোটেলে নারী ও যুবদের কর্মসংস্হান ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে যা কক্সবাজারের স্থানীয় নারী ও যুবদের যথেষ্ট দক্ষ করবে যাতে তারা সম্মানজনক ও শোভন কাজে যুক্ত হতে পারে এবং নিজেরা ব্যবসা শুরু করার মধ্যে দিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠতে পারে । কানাডা এবং নেদারল্যান্ডের সরকার দ্বারা অর্থায়িত এই প্রকল্পটি। আইএলও এই প্রকল্পটি ব্র্যাক, ইউএনডিপি এবং এফএও এর সঙ্গে পার্টনারশীপের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজার জেলার নারী ও যুবগোষ্ঠীর সার্বিক উন্নয়নে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ওখঙ এর সার্বিক সহায়তায় কানাডা এবং নেদারল্যান্ড সরকারের অর্থায়নে প্রকল্পটি ২০২৫ সালের ৩০ নভেম্বর সময় পর্যন্ত বাস্তবায়নাধীন থাকবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কক্সবাজার জেলার ১৮-৩৫ বছর বয়সী ২৪ হাজার কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ও আত্ম-কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে যা কক্সবাজারের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন,দেশের অন্যতম পর্যটন নগরী কক্সবাজার। এখানে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত, যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। তাই কক্সবাজার জেলার সার্বিক উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই আন্তরিক। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে কক্সবাজারবাসীর জন্য একটি বিশেষ উপহার নিয়ে এসেছি। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ওখঙ এর সার্বিক সহায়তায় ‘খবধারহম ঘড় ঙহব ইবযরহফ: ওসঢ়ৎড়ারহম ঝশরষষং ধহফ ঊপড়হড়সরপ ঙঢ়ঢ়ড়ৎঃঁহরঃরবং ভড়ৎ ঃযব ডড়সবহ ধহফ ণড়ঁঃয রহ ঈড়ী’ং ইধুধৎ, ইধহমষধফবংয’ শীর্ষক প্রকল্পটি গত ২৯ আগষ্ট ২০২৩ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ১৭৬.৮৮ কোটি টাকা । আমাদের দুই বন্ধু প্রতীম রাষ্ট্র কানাডা (৯১.০৫%) এবং নেদারল্যান্ড (৮.৯৫%) সরকারের অর্থায়নে কক্সবাজার জেলার নারী ও যুবগোষ্ঠীর উন্নয়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। তিনি আরও বলেন, একটি জেলায় একক প্রকল্প হিসেবে এ প্রকল্পটি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের একটি বৃহৎ প্রকল্প। এবং কক্সবাজারবাসীর জন্য এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার একটি বিশেষ উপহার। বিশেষ উপহার কারণ প্রকল্পটি শুধু মাত্র কক্সবাজার জেলার জন্য নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কক্সবাজারে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি যুবদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে টেকাব ও ইমপ্যাক্ট প্রকল্প চলমান পাশাপাশি এখানে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আর্ন প্রকল্প গ্রহন করা হচ্ছে। ক্রীড়ার উন্নয়নে কক্সবাজারকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এ জন্য অবকাঠামো গড়ে তোলাসহ নানা ধরণের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন অব্যাহত রয়েছে। এতে খেলাধুলার মাধ্যমে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পেরও বিকাশ ঘটবে।আমরা এখানে শহীদ শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ এর উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা কক্সবাজারের প্রতিটি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করে দিচ্ছি। কক্সবাজারে রামুতে আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) নির্মান করা হয়েছে। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামের সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন এবং জেলা ইনডোর স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।এইচ.ই. লিলি নিকোলস, হাইকমিশনার অফ কানাডা ইন বাংলাদেশ এক বার্তায় জানান,“কানাডা কক্সবাজারের স্থানীয় সম্প্রদায়ের স্থিতিস্থাপকতা তৈরির প্রচেষ্টাকে সমর্থন করতে পেরে আনন্দিত, যারা দীর্ঘস্থায়ী আঞ্চলিক সংকটের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চাবিকাঠি, বাংলাদেশের নিজস্ব জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতির সাথে সঙ্গতি রেখে নারী ও যুবকদের দক্ষতা তৈরিতে আমাদের অংশীদারদের সাথে কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আমরা এই প্রচেষ্টায় আমাদের সাথে যোগ দেওয়ার জন্য অন্যান্য দেশকে আমন্ত্রণ জানাই,“নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর শোভন কাজ করার জন্য তার সমর্থন প্রসারিত করতে পেরে আনন্দিত কারণ আমরা বিশ্বাস করি যে কাউকে পিছিয়ে রাখা উচিত নয় – নারী নয়, যুবক নয়, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি নয়, কেউ নয়,” বলেছেন থিজ ওয়াউডস্ট্রা চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স অফ দ্যা কিংডম অফ দ্যা নেদারল্যান্ডস টু বাংলাদেশ। “কর্মজগত দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং বাংলাদেশের সকল মানুষকে, বিশেষ করে নারী ও যুবকদের অবশ্যই এমন দক্ষতায় সজ্জিত করতে হবে যা তাদেরকে সফল ব্যবসা শুরু করার পাশাপাশি বর্ধিত স্বয়ংক্রিয়তা, ডিজিটালাইজেশন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ফলে সৃষ্ট কাজের সুযোগের সুবিধা নিতে সক্ষম করবে, “- বললেন তুওমো পাউটিয়ানেন, আইএলও কান্ট্রি ডিরেক্টর ফর বাংলাদেশ।হোটেল ওশান প্যারাডাইসে এই উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে যেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মহিউদ্দিন আহমেদ, মহাপরিচালক, গ্রেড-১, ডিওয়াইডি মোঃ আজহারুল ইসলাম খান, জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার মুহাম্মদ শাহীন ইমরান, কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী, এনসিসিওই প্রতিনিধি নাইমুল আহসান জুয়েল এবং ব্র্যাক, অংশীদার জাতিসংঘ সংস্থা-এফএও এবং ইউএনডিপির প্রতিনিধিরা।
Discussion about this post